বাংলাদেশের পুরাকীর্তি বিষয়ে একটি রচনা লিখুন। Write an essay on the antiquities of Bangladesh

বাংলাদেশের পুরাকীর্তি

বাংলাদেশের পুরাকীর্তি বিষয়ে একটি রচনা লিখুন।

ভূমিকা: বাংলাদেশ একটি সুপ্রাচীন দেশ। হাজার বছরের সংগ্রামের ইতিহাস ও প্রাচীনত্বের গরিমায় বাংলা সারা বিশ্বে পরিচিত। আর্য, মুঘল, ইংরেজ, পর্তুগিজসহ বহু জাতির পদচারণায় আমাদের এ বাঙালি সভ্যতা সমৃদ্ধ হয়েছে। সময়ের স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারায় বহু সংযোজন-বিয়োজন হয়েছে। বাংলার এ ক্রমবিবর্তনের ইতিহাস আমরা অনেক মূল্যবান প্রাচীন গ্রন্থ, কাব্য, উপন্যাস ও পুথিতে পাই। আরও একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হলো একটি দেশের পুরাকীর্তি, যা সেই দেশের অতীতকালের সাক্ষ্য বহন করে। দেশটি কেমন উন্নত ছিল, তার কৃষ্টি-সংস্কৃতি কতটা উৎকর্ষ লাভ করেছিল, সে সম্পর্কে তথ্য ও সে দেশের সভ্যতার মান নির্ণীত হয় পুরাকীর্তির ওপর

বাংলাদেশের পুরাকীর্তির অবস্থান: বাংলাদেশের অধিকাংশ পুরাকীর্তি নির্মিত হয়েছিল মূলত মুসলিম ও প্রাক-মুসলিম যুগে। যখন নানা ধর্মের বিকাশ শুরু হয় ও বিভিন্ন জাতি প্রাচীন বাংলায় উপনিবেশ গড়তে শুরু করে। বাংলায় ধর্মের বিকাশ ও বসবাসের সুবিধার্থে তথা দেশ শাসনের তাগিদে তখন বহু ইমারত গড়ে ওঠে। বাংলার অধিকাংশ পুরাকীর্তি রাজশাহী, খুলনা, বাগেরহাট, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, নাটোর, সোনারগাঁ, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, যশোর প্রভৃতি অঞ্চলে অবস্থিত। বলতে গেলে, সারা বাংলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরও অনেক নিদর্শন । চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক প্রাচীন গৌরব।
বাংলাদেশের পুরাকীর্তির ধরন: মুসলিম ও প্রাক-মুসলিম যুগে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী রাজার শাসনামলে কৃষ্টি ও সংস্কৃতি ভিন্ন ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়। ধর্মের প্রভাব আমাদের পুরাকীর্তিসমূহে প্রকাশ পায়। সেন রাজাদের পূর্বে যখন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পাল রাজারা দীর্ঘকাল ধরে বাংলা শাসন করেন তখন তাদের ভাস্কর্য ও স্থাপত্য শিল্পের দারুণ উন্নতি হয়। এসব স্থাপত্য শিল্পের অধিকাংশই হলো মঠ, আশ্রম ও বৌদ্ধ মন্দির; যা আমাদের তখনকার সময়ে বৌদ্ধ ধর্মের বিকাশ সম্পর্কে ধারণা দেয়। পরবর্তী সময়ে সেন রাজাদের আমল থেকে মুসলিম যুগের পূর্ব পর্যন্ত যে ইমারতগুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে হিন্দু ধর্মের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সেন রাজাদের তৈরি এসব মন্দিরের নির্মাণশৈলী ও অলঙ্করণে হিন্দু ধর্মের আভিজাত্য ও মহত্ত্ব প্রকাশ পেত। মুসলিম যুগে ইসলাম ধর্মের প্রসারের লক্ষ্যে রাজা-বাদশারা অনেক পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। অনেক মসজিদ, কেল্লা এ সময় নির্মিত হয়। মোজাইক, দেয়াল চিত্র, মার্বেলের জালি, নকশাকাটা দেয়াল, দরজা, খিলান ও জ্যামিতিক নকশা এসব মুসলিম যুগের পুরাকীর্তির বৈশিষ্ট্য ।

বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি: বাংলাদেশের পুরার্কীতি সমস্ত দেশগুলোর দেশজুড়েই বিস্তৃত। খন্দকার মাহমুদুল হাসান রচিত ‘বাংলাদেশের পুরাকীর্তি কোষ : প্রাচীন যুগ' এবং 'বাংলাদেশের পুরাকীর্তি কোষ : মধ্যযুগ' নামক গ্রন্থে বাংলাদেশের পুরাকীর্তির ইতিহাসের বিশদ বিবরণ রয়েছে। বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পুরাকীর্তি সম্পর্কে নিম্নে আলোকপাত করা হলো :

i. মহাস্থানগড়: বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন পুরাকীর্তি মহাস্থানগড়। বগুড়া শহর থেকে ১৩ কিমি উত্তরে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশে এই ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানগড় অবস্থিত। সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৬ মিটার উঁচু প্রতিরক্ষা প্রাচীর দ্বারা স্থানটি পরিবেষ্টিত। প্রাচীরের অভ্যন্তরে দক্ষিণ-পূর্ব কোণের সর্বোচ্চ স্থানটি জুড়ে রয়েছে শাহ সুলতান মাহীসওয়ারের মাজার ও মোগল সম্রাট ফররুখ সিয়ার-এর একটি মসজিদ। এছাড়া উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে ৮ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে নগরের বাইরে বিভিন্ন স্থানে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত বহু ঢিবি রয়েছে। এগুলো প্রাচীন প্রাদেশিক রাজধানীর শহরতলির সাক্ষ্য বহন করে। অন্য পর্যটক ও পণ্ডিত ব্যক্তি, বিশেষত বুকানন হ্যামিলটন, ওডোনেল, ওয়েস্টম্যাকট, বেভারীজ ও স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই শহরতলি এলাকাটি পরিদর্শন করেন। কিন্তু ১৮৭৯ সালে এ ধ্বংসাবশেষকে প্রাচীন পুণ্ড্রনগরের ধ্বংসাবশেষরূপে শনাক্ত করেন স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অনুসন্ধানের ফলে মহাস্থানগড়ে যা আবিষ্কৃত হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরশুরামের প্রাসাদ, খোদার পাথর ভিটা, বৈরাগীর ভিটা, গোবিন্দ ভিটা, শীলাদেবীর ঘাট, বেহুলা সুন্দরী ও লখিন্দরের বাসরঘরের ধ্বংসাবশেষ, ভাসুবিহার, মানকালীর কুণ্ড ধাপ, বোরহান উদ্দিনের মাজার। মহাস্থানগড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এরকম বহুসংখ্যক প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে; যা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে।

iiময়নামতি: কুমিল্লা জেলার অদূরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থান ময়নামতি। মধ্যযুগে বৌদ্ধ রাজত্বের রাজধানী ছিল এই স্থানটি। ঐতিহাসিকদের মতে, রাজা মানিকচন্দ্রের স্ত্রী রানী ময়নামতির নামানুসারে এই অনুচ্চ পাহাড়ি এলাকার নাম রাখা হয় ময়নামতি। কুমিল্লা জেলার অধিকাংশ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাদি এখানে অবস্থিত। শালবন বিহার, আনন্দ বিহার প্রভৃতি দেশের বৃহত্তম ধ্বংসাবশেষ এখানে অবস্থিত। এসব বৌদ্ধবিহারে প্রাচীন বৌদ্ধ সভ্যতার বহু নিদর্শনাদি পাওয়া গেছে। ১৯৫৫ সালে । এখানে যখন খননকার্য শুরু হয় তখন এসব নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। বৌদ্ধ সভ্যতা ছাড়া এখানে অনেক জৈন ও হিন্দু দেব-দেবীর মূর্তিও পাওয়া গেছে। এছাড়া এখানকার আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনাদি সংরক্ষণের জন্য একটি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরও স্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে ময়নামতিতে একটি সেনানিবাস রয়েছে, যেটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের একটি যুদ্ধঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ময়নামতি ছাড়া এটি লালমাই ও হিলটিয়া নামেও পরিচিত ।

iii. পাহাড়পুর: ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিশালায়তনের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হলো সোমপুর বিহার। রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত এই বিহার বাংলাদেশের বৌদ্ধ ও হিন্দু সংস্কৃতির এক আকর্ষণীয় নিদর্শন । বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে ২৯ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ও জালালগঞ্জ থেকে ৩ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত সোমপুরের ধ্বংসাবশেষ। এর বর্তমান নাম পাহাড়পুর অনুমান করা হয় অষ্টম শতাব্দীতে পাল রাজত্বের প্রথম দিকে ধর্মপাল পিতৃভূমিতে এক বিশাল ও সুউচ্চ মন্দির স্থাপনের লক্ষ্যে পাহাড়পুরের সোমপুর বিহার নির্মাণ করেন। ১৯২৩ সালে এর খনন কাজ সমাপ্ত হলে দেখা যায় যে, এর মধ্যে মোট ১৮৯টি কুঠুরি আছে, যার ৯৮টিতে পূজার জন্য উঁচু বেদী রয়েছে। কুঠুরির পাথরনির্মিত দেয়ালের গায়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ দেব-দেবীর ৬৩টি মূর্তি খোদাই করা আছে। সোমপুর বিহারটি উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৯২২ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৯১৯ ফুট লম্বা। এর চারপাশে রয়েছে ১৭৭টি আবাসিক কক্ষ, প্রবেশপথ এবং ছোট ছোট অনেক স্তূপ ও মন্দির। বিহারের অভ্যন্তরে সবচেয়ে উঁচু ঢিবিতে অবস্থিত মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে উত্তর-দক্ষিণে ৩৫৬ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং প্রস্থে পূর্ব-পশ্চিমে ৩১৪ ফুট ৩ ইঞ্চি ।

iv. ষাটগম্বুজ মসজিদ: বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদটি সুলতানি আমলে নির্মিত । খান জাহান আলী কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত হয় । মসজিদের নির্মাণকাল পঞ্চদশ শতক বলে ধারণা করা হয়। কারণ ঐ শতকেই খান জাহান আলী যশোর-খুলনায় ইসলাম প্রচার ও জনহিতকর কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রাচীন আমলের মসজিদগুলোর মধ্যে বৃহত্তম মসজিদ ‘ষাটগম্বুজ’। এ মসজিদের নাম ষাটগম্বুজ হলেও প্রকৃতপক্ষে মসজিদের গম্বুজসংখ্যা ৮১টি। ওপরে ৭৭টি এবং চারকোণে ৪টি। এটি বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত বিখ্যাত স্থাপত্যকীর্তি। মসজিদের বাইরের আয়তন ১৬০ × ১০৪ এবং ভেতরের আয়তন ১৪৩ × ৮৮। চার কোণায় দ্বিতল গোলাকার মিনার। মূল অবকাঠামো ইটের তৈরি। দেয়ালগুলো অত্যন্ত পুরু ও মজবুত । ৭৭টি গম্বুজের ৭টি এ দেশীয় রীতিতে তৈরি চৌচালা গম্বুজ। পূর্ব দিকে ১১টি খিলানযুক্ত প্রবেশপথ এবং উত্তর-দক্ষিণে আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য ৭টি করে প্রবেশপথ রয়েছে। পশ্চিম দেয়ালের প্রধান মিহরার পাথরের ওপর নকশাকৃত হলেও অন্যান্য মিহরাবে রয়েছে টেরাকোটা বা পোড়ামাটির ফলকচিত্র। ষাটগম্বুজ মসজিদ পরিচ্ছন্ন গঠনশৈলী ও আয়তনের কারণে এখনও বিস্ময়ের উদ্রেক করে ।

v. লালবাগ কেল্লা: লালবাগ কেল্লা বাংলার অন্যতম এক জনপ্রিয় পুরাকীর্তি। এর পূর্বনাম ছিল আওরঙ্গবাদ দুর্গ। এটি পুরাতন ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে অবস্থিত। মুখল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহজাদা মুহাম্মদ আজম শাহ ১৬৭৮ সালে এ লালবাগ কেল্লা নির্মাণ শুরু করেন। এটিকে বাংলার বিখ্যাত মুঘল কীর্তিতে পরিণত করার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু তিনি কেল্লা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি। পরে শায়েস্তা খান বাংলার সুবাদার হয়ে আসলে এ কেল্লার কাজ শুরু হয়। ১৬৮৪ সালে শায়েস্তা খানের কন্যা ইরান দুখত রহমত বানু অর্থাৎ পরীবিবির মৃত্যুর পর এ কেল্লাকে অশুভ বলে চিহ্নিত করা হয় এবং কেল্লা নির্মাণ কাজের পরিসমাপ্তি ঘটে। এ কেল্লায় তিনটি ইমারত, দুটো প্রবেশদ্বার ও অসমাপ্ত দুর্গ আছে। কেল্লার ভেতরে পরীবিবির সমাধিক্ষেত্র, পূর্বে দিওয়ানি-ই-আম ও . হাম্মামখানা এবং পশ্চিমে একটি মসজিদ আছে। তাছাড়া একটি দিঘি ও পানির ফোয়ারা আছে। পরীবিবির সমাধিক্ষেত্রটি যে কক্ষে অবস্থিত, তার চারপাশে আটটি কক্ষ আছে এবং পুরো সমাধিক্ষেত্রের ভেতরের দেয়াল সাদা মার্বেল দিয়ে মোড়ানো । তবে একটি অজ্ঞাত ছোট সমাধি ইমারতের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে রয়েছে। নানা ধরনের কল্পকাহিনি এ সমাধিক্ষেত্রকে ঘিরে রয়েছে। কথিত আছে, পরীবিবি শাহজাদা মুহাম্মদ আজমের স্ত্রী ছিলেন ।

vi. সোনারগাঁ: মুঘল আমলে বাংলাদেশের রাজধানী ছিল সোনারগাঁ। ঈসা খাঁ তার স্ত্রী সোনাবিবির নামে এর নামকরণ করেন । নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে অবস্থিত সোনারগাঁ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পুরাতাত্ত্বিক এলাকা। উল্লেখযোগ্য নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে পাঁচবিবির মাজার, সোনাবিবির মাজার, ঐতিহাসিক পানাম নগরী ইত্যাদি ।

vii. কান্তজীর মন্দির: দিনাজপুরে অবস্থিত কান্তজীর মন্দির বাংলার অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। চমৎকার টেরাকাটা নকশা, অলঙ্করণের জন্য এটি বাংলার অন্যতম আকর্ষণীয় মন্দির। এটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন মহারাজা প্রাণনাথ ১৭০৪ সালে এবং নির্মাণ শেষ হয় ১৭২২ সালে তার পুত্র রাজা রামনাথের আমলে । ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে এ মন্দিরের ব্যাপক ক্ষতি হয় ।

এছাড়া আহসান মঞ্জিল, উয়ারি বটেশ্বর, জগদ্দল বিহার, ছোট কাটরা, বড় কাটরা, হোসেনী দালান, রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর, কুমিল্লার সীতাকোট পাহাড়, সিলেটের শাহজালাল ও শাহপরাণের মাজার, চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামির মাজার, সীতাকুণ্ড পাহাড়ের তীর্থস্থান, পুরান ঢাকার মন্দির ও বৌদ্ধবিহার প্রভৃতি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে ।

পুরাকীর্তির সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা: বাংলার পুরাকীর্তি বাংলার অমূল্য সম্পদ। এ পুরাকীর্তির ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। এগুলো জীবন্ত ইতিহাস। সমসাময়িককালে ভূমিদস্যু, সংরক্ষণের অভাব ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে আমরা আমাদের পুরাকীর্তিগুলো হারাতে বসেছি। এসব পুরাকীর্তিগুলো সংরক্ষণের জন্য আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এজন্য সর্বাগ্রে দরকার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা, জনগণের সচেতনতা ও সহযোগিতা। তাহলে আমাদের নতুন প্রজন্ম তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। ফলে বিশ্বদরবারে আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সক্ষম হবো। উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আমাদের পুরাকীর্তি অতীত জীবনের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে। এগুলো আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। এগুলো পৃথিবীর বুকে আজও অনুসন্ধিৎসু মানুষের জ্ঞানতৃষ্ণা যোগায়। দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক, গবেষক এসব পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে আজও বাংলায় ভিড় জমায়। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখার প্রয়োজনে এসব পুরাকীর্তিগুলোর তত্ত্বাবধান একান্ত জরুরি।

Post a Comment

0 Comments